টুকরো টুকরো তরমুজ নিয়ে কাঁ’দছেন অসহায় চাষি

নাটোরে মাছেম আলী নামের এক চাষির খেতের বাড়ন্ত তরমুজ কুপিয়ে নষ্ট করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রায় তিন লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বর্গা নেয়া সাত বিঘা জমিতে এ তরমুজের আবাদ করেছিলেন অসহায় এই কৃষক। রোববার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার বড়হরিশপুর ইউনিয়নের ভেদরার বিলে এ ঘটনা ঘটে।

সোমবার (৫ এপ্রিল) সকালে মাছুম খেতে গিয়ে দেখেন বড় সাইজের প্রায় ২০০ তরমুজ কু;পি;য়ে টু;করো টু;করো করে রাখা হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে কিছু গাছ। জানা যায়, চাষি মাছেম আলীর খেতের তরমুজগুলোর অধিকাংশই আকারে ছোট। বেশ কিছু তরমুজ পরিপক্ব হওয়ায় সেগুলো বাজারে বিক্রির চিন্তা করছিলেন তিনি।

তবে বেশ কিছু দিন ধরে তরমুজগুলো চুরি হয়ে যাচ্ছিল। তাই তরমুজ রক্ষায় দিনরাত খেত পাহারা দেয়া শুরু করেন মাছেম আলীর ও তার পরিবারের সদস্যরা।গত শুক্রবার (২ এপ্রিল) স্থানীয় দুই শিশু তরমুজ চু;রি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে। বিষয়টি তাদের অভি;ভাবককে জানানো হয়।

চুরি;র ঘটনা অভিভাবকদের জানানোয় দিয়ারভিটা গ্রামের কসাই শহিদ ও আক্কুর নেতৃত্বে একদল দুর্বৃ;ত্ত গত শনিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে তরমুজ খেত থেকে ফেরার পথে মাছেম আলী ও তার ছেলে আমির হামজাকে মারপিট করে।

এ বিষয় স্থানীয় ইউপি সদস্যের মধ্যস্থতায় মীমাংসার কথা ছিল রোববার সন্ধ্যায়। কিন্তু কসাই শহীদ সালিশে আসবেন না বলে জানান। পরে মাছেম আলী নাটোর সদর থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। ওই রাতে টং ঘরে বসে খেত পাহারা দিচ্ছিল মাছেম এবং তার বড় ছেলে সেলিম। হঠাৎ করে ৮-১০ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করলে বাবা ও ছেলে পালিয়ে জীবন রক্ষা করে।

সোমবার বিকেলে ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায় অশ্রুসজল চোখে বসে আছেন চাষি মাছেম আলী। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। অনেক কষ্ট করে দিনরাত শ্রম দিয়ে তরমুজ চাষ করেছি। এখন আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমি এর বিচার চাই।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহেল রানা বলেন, ‘জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।’ নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাঙ্গাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।